আসরের কবিতা




(পুরানো পাতা থেকে)
প্রাণের ঠাকুর

কবি ( দেবাশীষ)
-----------
স্বপ্ন দেখি তোমায় ..
হৃদয় ভরে উস্নতায়..
স্তব্দ করে জনপদ..
পাহাড় পর্বত মরুপ্রান্তর ..
সকলি তুমিময়...
তোমার বাণী ছন্দে মুখর..
তোমার রচনা ..উন্মাদনা
কথা তোমার ঘুরে ফেরে..
লোক মুখে, পাঠ্য পুস্তকে..
পথিকের কোলাহলে..
ক্লান্ত অবকাশে, অবশাদে তোমার ছন্দ
মুখরিত বাংগালী হৃদয় ..
ভোরের বেলা, তপ্ত দুপুর..
বিদায় বাঁশি, রাখাল বালক..
চিলে কোঠা তোমার- তুমিময়..
ওগো ঠাকুর তুমি আজো আছো ছন্দে ..
বিশাদে, স্তব্দতায়,প্রেমে, বিরহে..
প্রনমি তোমায় আজি তোমার জন্মদিনে ঠাকুর..
অনবদ্যতার কান্ডারী তুমি..
ছন্দের বর্নময়তায় পূর্ণ করেছো আমাদের..
প্রনমি তোমায় ...



।। আমার কবিতা।। 

এস, এম, মনসুর নাদিম। 




**********************
আজি হতে পঁচিশ বর্ষ আগে,
এসেছিলাম দুবাই সহরে আমি।
একরাশ আশা ভরা হৃদয়ে,
দু চোখ ভরা স্বপ্ন ছিল দামি।
নিত্য নতুন স্বপ্নের স্বর্নালি জাল
বুনেছি বছরের পর বছর ধরে।
আশায় ভরেছি গোলা, কেটেছে কাল।
শুন্যতা ভরেনি আজো, বোঝায় কেমন করে।
কাটেনি নিঃসঙ্গতার পালা,
অভাবের সাথে বসবাস
অর্থ করেছি প্রচুর অর্জন,
সঞ্চয়ে শুন্য আমার প্রবাস।।
------------------------------------ [ ১০ আগস্ট, ২০১২ , আবুধাবি। ]

সময় যখন উল্টো চলে

---কাজী জহির আহমেদ
_________________
সময় যখন উল্টো চলে
সব হয়ে যায় ক্ষয়
বিবাগী মন উদাসী তখন
দুঃখ করে জয়।
মন সখী পরের ঘরে
একই বিছানায় রয়,
পোড়া নিয়তি হয় পথবাসী
দেখে যে সখীর জয়।
মম প্রাণ হারায় মান
নয়কে করে ছয়।
ভাগ্য দেবী মন সখী
উপহাস করে কয়,
ব্যর্থ প্রেমী উদাসী পতি
শূণ্যতে পড়ে রয়।
তবু সখার মিথ্যে বড়াই
মনে জন্ম হয়।


সুখের বাড়ি

আবু সাঈদ রুপিয়ান
____________________________
জীবনে যতো করেছি পাপ,
দেবে কি খোদা আমায় মাফ?
আমি তো হই সৃষ্টি তার,
তার কাছে তাই মানি হার।
কেউ নেই তো তার সমতুল,
তিনিই আদি তিনিই মুল।
তার ইশারায় ধ্বংস ঘটে,
তার আসন তো হৃদয় পটে।
জীবন মরন তারই দান,
আমি বান্দা নাফরমান।
রোজ হাশরের কঠিন দিনে,
কে তরাবে আল্লাহ বিনে?
ভেবে দেখি মনে মনে,
প্রেম করিবো তারই সনে।
যদি প্রেমে জিততে পারি,
কবর হবে সুখের বাড়ি।
১৫/০৫/২০১৫

উপদেশ 

পূর্ণচন্দ্র বিশ্বাস

সিগারেট জ্বলিও না
নিজের মৃত্যুপথে অন্যকে সতীর্থ করোনা
থুতু ফেলনা যেখানে সেখানে
মশা-মাছি মহানন্দে চড়ুইভাতি করবে
যেখানে সেখানে আবর্জনা ফেলনা
রোগ জীবানু সর্বক্ষণ কৃষিক্ষেত্র খোঁজে
মহিলার দিকে আর চোখে চেয়োনা
সেণ্ট্রাল পার্ক সাধারণের জন্য নয়
ভরপেট আহার ভালো নয়
একবার ভুড়ি বাড়লে আর কমে না
অন্যের অর্থে ইর্ষা করোনা
তৃতীয় বিশ্বে কীট-পতঙ্গ আর
দারিদ্রের অনুপাত প্রায়-সমান
ভুলেও উচ্ছিষ্ট খেয়ো না
না হয় এক আদবেলা হরিমটর খেয়ো
অশুখ হলে ডাক্টারের পরামর্শ নাও
নইলে হাসপাতালে যাও
জান বাড়ি কিম্বা ঠাকুর বাড়ি যেও না
ঠগি আর ঠগবাজদের হাতে পড়ে
একটা জাতি আজ ধ্বংসের মুখে
ভোরের হাওয়া মেখে পথ হাঁটো
দিনে একটা সময় বার করে সংবাদ পত্র পড়ো
রাজনীতির ধান্দাবাজি বুঝতে চেষ্টা করো
ধর্ষকের বিরুদ্ধে তোমার কণ্ঠ সোচ্চার হোক
দিল্লী-কামদুনি-খরজুনা-রানিতলা
মধ্যমগ্রাম ---, আর শুনতে চাইনা
মানি-পার্সে কাগুজে নোটের বদলে
ব্লাঙ্ক চেকের কি দরকার ?
নিজের পেশা ঠিক করো
মদের লাইসেন্স না নিয়ে
শিক্ষানিকেতন গড়তে পারো
এখন দেশে-দেশে অশিক্ষা-কুসংস্কার
জীবনের গতিপথ আটকে আছে
সব কথা গীতা-ভাগবত-পুরান
বাইবেল কিম্বা মহাকাব্যে পাবে না
এমনকি মন্দির-মসজিদ-গির্জা শ্মশানেও নয়
মহান যীশু বলেছেন-অন্ধকার থেকে উঠে এসো
স্মামীজি বলেছেন-রক্তদান করো
শুধু বাঁচার জন্য-বেঁচে থাকা নয়
কর্মে নিবিষ্ট থাক
কবি সুকান্তে সহমত হয়ে দৃপ্ত কণ্ঠে বলো
"যতক্ষণ দেহে আছে প্রাণ
প্রাণপনে পৃথিবীর সরাব জঞ্জাল"


বোবা পৃথিবীর বুকে 

-কে এম আলাউদ্দীন

ভেতরটা জ্বলে পুড়ে, দুমড়ে-মুচড়ে
খান খান হয়ে, ঝোড়ো ঝড়ের কবলে
পাখীর ডানার কষ্ট হয়ে
গুলিবিদ্ধ ছটফট করা
রাজ পথের নিরন্ন অসহায় মানুষের
কাতর-মুখের কোঁচকানো ভাঁজপড়া যন্ত্রণা হয়ে..........
না, বোঝানো যাবেনা, ভেতরের অবুঝ সহজ কথা
কোন ভাবেই যেন বোঝানো যাচ্ছেনা।
না না, কবিতা নয়, অব্যক্ত হৃদয়ের
কয়েকটি হাবাগোবা শব্দমাত্র----
বর্ণের ব্যকুলতা, মাত্রা-বর্ণ-চরণের নকশী কাঁথা,
ছন্দের সুর-তাল, অলংকার,
শৈল্পিক জ্যোতিচ্ছটা, সাজগোজ নাকের নোলক-বিছা
চুড়ি-ফিতা, আই-ভ্রূ, রং খেলা
চোখের রঙিন ভাষা কিছুই এখানে নেই।
পড়ে আছে আকাশের কোল জুড়ে
লৌকিক তবু যেন অলৌকিক ছবি, মনে হয়
নিষ্প্রভ আলো হয়ে সেখানে হৃদয়ের হাতগুলো
দূরে ছুঁতে চায় স্মৃতি, কেবলই ছুঁতে চায়
দীর্ঘ থেকে দীর্ঘ হয়ে ধরতে চায়, পারেনা
নিরবে কাতরায় লক্ষ্যের দিকে ;
মনে হয় চেনা চেনা
দূর থেকে দূরে, সু-সমান তালে সরে সরে
নিজেকে আড়াল করে পালিয়ে বেড়ায়।
এখন এখানে শুধু
ভেতরের দুর্বোদ্ধ নগ্নতা আর
কাতরতা, অস্থিরতা
অব্যক্ত অসহায়ত্বের,
ঘোড় দৌড়, হোঁচট খাওয়া ইচ্ছার হলুদ বোঁটা;
বিষাক্ত সাপের ছোবলে ছোবলে
রক্তাক্ত, পিঞ্জিরাবদ্ধ জীবনকে দেখতে থাকা---
এ ছাড়া কিইবা করার থাকে।
আমি এবং
আমার ভেতরটা আলাদা, বশ্যতা মানেনা কিছুতেই
ধরা ছোঁয়ার বাইরে, নির্মম পাসন্ড, নির্বোধ, স্বার্থপর,
খামখেয়ালী, অভিমানী, প্রচন্ড আবেগী।
তুমি দূরে আত্মমগ্ন
আত্ম জ্যোতির ঝলক আড়াল করে
অপ্রকাশ্য সুরে কোথায়, কোন দূর অসীমে
শান্তির সুধাপাত্র নিয়ে জেগে আছো!
কেন যে আমার সেই তুমি আজ
স্তব্ধ, অতল স্পর্শী ম্লান
আলো-আঁধারের লুকোচুরির খেলার প্রচ্ছায়া।
না, সহজ সরল হৃদয়ের শব্দাবলী
উপলব্ধির অচেনা যত যন্ত্রণা ধ্বনি
শরবিদ্ধ মৃত লাশের
শীতল ঘরের মাঝে আর----
আর কেন বেঁচে থাকা?
না, বোঝানো যাবেনা;
বোবা পৃথিবীর বুকে
সুপ্ত যন্ত্রণার
আগ্নেয়গিরীর
ছড়ানো লাভা নিয়ে
আমি এবং আমার ভেতরটা
বিচ্ছিন্ন ঘুড়ির মত আলাদা পড়ে আছে----
না, বোঝানো গেল না।
‪#‎বরিশাল‬, ১৫০৫১৫
প্রকাশিত: banglasp.com

আজব

দেবাশীষ ভট্টাচার্য
-------
এযে হট্টমেলার দেশ..
কান্না হাসি মিলে মিশে..
হয়না কভু শেষ ...
ভুতের ছানা ডাকছে পাছে..
অদ্ভুতুরে কি বা আছে..
শব্দগুলো ছুটছে পাছে..
আসছে সকাল , যাচ্ছে মিছে..
দিন গোনার সে গান..
কান্ড দেখে পাচ্ছে হাসি..
ভান্ডারে তার রাশি রাশি..
মিথ্যে বোঝাই অট্টহাসি ..
ছুটছে রাখাল প্রান্ত ধেয়ে ..
হাটছে কিশোর দল..
পাচ্ছে সে আর কিসে ছোঁয়া ..
পরশ পাথর ইটের খোয়া..
যাই ধরেছি শক্ত হাতে..
জুটেছে না যে ভাত আর থালাতে..
যাচ্ছে চলে এই ভাবেতেই..
দিনের আলো, রাত নেমেছে ..
আসছে সুদিন , দিনের আশায় ..
করগোনা যে শেষ নাকো হয়..
তবুও আশা কন্ঠে ছোটে..
দৃপ্ত চোখে, শূন্যে, তটে..
চল দেখাযাক কপাল কেমন..
দেখিনা শেষে কি পাওয়া যায়..
আজো যে বসে দিনের আশায় ..

তোকে নিয়ে… এলোমেলো  

– হাবীব কাশফি
groupe post korechen (Md Ariyan)

নিঃসঙ্গতার সাথে সখ্য গড়েছিলাম ভালোই,
তারপর…
চোখে মোটা গ্লাসের চশমা
রুক্ষ চুলের লুকোচুরি
আর তার বন্য হাসির উচ্ছলতা,
ভেবেছিলাম তোকে নিয়ে লিখবো কবিতা,
এলোমেলো বন্য কবিতা।
আগুনঝরা ফাগুনে ঝাপসা চোখে
বাসন্তি শাড়ি জড়িয়ে খুজেছিলি আমাকে
হাজারো ভীড়ের মাঝে,
রঙ্গিন বৈশাখের তপ্ত রৌদ্দুরের নিঃস্বঙ্গতায়
হারিয়ে ফেলেছি তোকে
হাজারো রঙের ভীড়ে,
ভেবেছিলাম তোকে নিয়ে লিখবো আরো একটি কবিতা
এলোমেলো রঙ্গিন কবিতা।
তোর আঙ্গুলের ফাঁকে আঙ্গুল জড়িয়ে
ইচ্ছে ছিলো কাটাবো কতো অলস দুপুর,
তুই চেয়েরবি আমার চোখে
মোটা গ্লাসের চশমার ফাকে,
ভেবেছিলাম তোকে নিয়ে লিখবো একটি কবিতা
এলোমেলো অলস দুপুরের কবিতা।
একটি বর্ষা পেরিয়ে যায়
অঝোর বর্ষনে বিষন্নতার চাদর হয়ে,
শরতের স্নিগ্ধ বিকেলে
হাটবো কি দুজন আবারো একই ধারে?
অচেনা পথের ধুলো মাড়িয়ে
আঙ্গুলের ফাকে আঙ্গুল জড়িয়ে,
সেই মোটা গ্লাসের চশমা চোখে
পাড় হবে কতো শত গোধূলী বেলা।
ভেবেছিলাম তোকে নিয়ে লিখবো গোধুলি মাখা একটি কবিতা,
শত শত কবিতা
এলোমেলো কবিতা
কিছু তুচ্ছ কবিতা।

মুনাযাত

-Md Mansur Ullah

প্রভূ আমার আমলনামায়
কত যে পাপ জমা,
তুমি যদি না কর গো
মিলবেনা মোর ক্ষমা।
তুমি যদি আগলে না নাও
তোমার আপন দ্বারে,
পাপিষ্ঠ মন পাপের কাছে
ফিরবে বারে বারে।
আমার এ মন ঘুরিয়ে রাখ
তোমার কাবার পানে,
গর্হিত কাজ হয় না যেন
ঈমানেরই টানে।
মনের মাঝে আধার যত
দাও করিয়া দুর,
হেথায় তুমি কর স্থাপন
তোমার পাক-নূর।
তুমি যা চাও বান্দা হতে
হোক আমার তা চাওয়া,
আমার কাজে তুষ্ট তুমি
এইতো পরম পাওয়া।
কাদার মত নরম করে
দাও আমার এ মন,
নতুন করে গঠন কর
চাও তুমি যেমন।

No comments:

Post a Comment