।।ঘেন্না।।
-সাঈফ ফাতেউর রহমান
তুমি তো খুনি-রাজাকার ছিলে নানা,
আগে তো বুঝতামনা কোন কিছু,ভাল লোক বলেই জানতাম,
নামাজ-কালাম পড়ো,রোজা রাখো ত্রিশ দিন,হজ্ব করেছো,
মাঝে মাঝে মিলাদ দাও,জিকির আজগর করো,ওয়াজ-নসীহতে
যাও,ইসলামী জলসায় বয়ান শোন,নিজ গ্রামে মাঝে মাঝে
নিজেও বয়ান দাও।অনেক জমি-জিরাত তোমার,পুকুর-দীঘি,মাছ চাষ,
চাঊলের কল,আটার কল,তেলকল,পানের বরজ,হাঁটের ইজারা,ঘাটের
ইজারা,আরো কত কিছু যে আছে তোমার,সব তো আমি কেন,মা-ও
জানেনা।বিশাল এলাকা জুড়ে,গ্রামে কি-বিরাট পাকা বাড়ী,বিদ্যুৎ,নিজস্ব
জেনারেটর,সৌরচুল্লি,সৌরবিদ্যুৎ,আধুনিক সব উপাচার।আরব্য রজনীর
দৈত্য করে দিয়েছে এসব?
টেলিভিশন-ফ্রিজ-মোবাইল তো ডালভাত,বিশেষ আয়োজনে
বাড়ীর সীমানা পুরোটাই ওয়াইফাই।
মা তোমাকে সহ্য করতে পারেনা কোনদিনই,নানীও না,বাবা তো
কোনদিনই যায়না তোমার বাড়ী,মা-ও না,আমাকেও পাঠাতে চায়না তারা,
তোমার দাপটে কথা বলতে ভয় পায় লোকে,তবে বড় হয়ে ফিসফাসের অর্থ
তো বুঝে গেছি;ঘৃণা করে তোমাকে গাঁ-আশেপাশের লোকজন,যা কিছু আজ
হয়েছে তোমার,পাপ-পথে উপার্জিত সবকিছু;
শান্তিকমিটির চেয়ারম্যান ছিলে একাত্তরে-সব সম্পদ-জমি লুটের ফসল,ধর্ষক
ছিলে তুমি নিজেও,পাকি-পশুদের হাতে তুলে দিতে নারীর সম্ভ্রম,এমনকি
নিজ পাড়া,নিজ গ্রাম,আত্মীয়া নারীদেরও রেহাই দাওনি তুমি;স্বাধীনতার পর
পলাতক ছিলে দীর্ঘদিন;বঙ্গবন্ধু হত্যার পর তোমাদের ত্রাণকর্তা ক্ষমতা
দখল করতেই নকুল থেকে রাতারাতি হয়ে গেলে বাগডাশ।ফিরে পেলে আসল
স্বরূপ;এখন দক্ষ-অভিনেতা,সেজেছো ধার্মিক,জনসেবী,দাতা,জন প্রতিনিধি।
সে সময়ের অনেকেই বেঁচে নেই,বিপর্যস্ত অনেকেই জীবন সংগ্রামে,স্থানান্তরে
গিয়েছে কেউ কেউ,অনেকেই ভয়ে খোলেনা মুখ;এখন দাপুটে মানুষ তুমি,
শুধু একমাত্র সন্তান-আমার মা,তার পুত্র আমি,আমার পিতা,আমাদের সমূহ
ঘৃনা তোমার জন্য নিশিদিন,নানীতো দুঃখে-লজ্জায় আত্মহত্যা করেছেন বহু আগে।
লুটের সম্পদ,অর্থ,বাড়ী-ক্ষেত,কবরে নিয়ে যেও,যদি পারো,অনেক ক্ষমতা তোমার!
No comments:
Post a Comment